Medical Admission Test 2012 is corrupted
এসসি ফলাফলের ওপর। দুটির সমন্বয়ে মেধা তালিকা করে ভর্তি করা হতো। কিন্তু সরকার এই গ্রহণযোগ্য জনপ্রিয় পদ্ধতিকে নানা অজুহাত দেখিয়ে জিপিএ পদ্ধতি চালু করল।এর ফলে শিক্ষার্থীরা মেধা বিকাশের সুযোগ হারিয়ে ফেলবে।
সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে কঠোর আন্দোলনে মেডিকেল কলেজে ভর্তিচ্ছু হাজারও শিক্ষার্থী। ভর্তিতে জিপিএ পদ্ধতির সিদ্ধান্ত বাতিল করে প্রচলিত পরীক্ষা পদ্ধতি পুনর্বহালের দাবিতে গতকাল তারা রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে দিনভর বিক্ষোভ, অবস্থান ধর্মঘট, রাস্তা অবরোধ ও স্মারকলিপি দিয়েছেন। এসব কর্মসূচিতে বাঁধা দিয়েছে পুলিশ। অন্যদিকে সামাজিক ওয়েবসাইট ফেসবুক ও ব্লগেও প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। তবে এ বিষয়ে শেষ পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে দাবি পূরণের আশ্বাস পাওয়া যায়নি।
এদিকে সরকারের সিদ্ধান্তের চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করা হয়েছে। পরীক্ষা পদ্ধতি বাতিল করে জিপিএর ভিত্তিতে মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজে শিক্ষার্থী ভর্তির সিদ্ধান্তের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে গতকাল ‘জনস্বার্থে’ হাইকোর্টে রিট আবেদন করেছেন ড. ইউনুস আলী আকন্দ নামের এক আইনজীবী।
রিটকারী এই আইনজীবী জানান, মঙ্গলবার (আজ) বিচারপতি নাঈমা হায়দার ও মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের বেঞ্চে এ আবেদনের ওপর শুনানি হতে পারে। রিট আবেদনে দুটি রুল এবং দুটি অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। ওই আইনজীবী জানান, এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএস প্রথম বর্ষে ভর্তির সিদ্ধান্ত কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এবং ওই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার ও বাতিলে বিবাদীদের কেন নির্দেশ দেয়া হবে না, তা জানতে রুল চাওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে ওই সিদ্ধান্তের কার্যকারিতা স্থগিত করার অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ এবং ২০১২-১৩ সেশনে এমবিবিএস প্রথম বর্ষে ভর্তির বিজ্ঞাপন প্রকাশের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে রিট আবেদনে। রিট আবেদনে স্বাস্থ্যসচিব, শিক্ষাসচিব, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালককে বিবাদী করা হয়েছে।
রোববার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য প্রচলিত পরীক্ষা পদ্ধতি বাতিল করে। এর পরিবর্তে ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষ থেকে নতুন করে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার জিপিএ ফলাফলের ভিত্তিতে শিক্ষার্থী ভর্তি নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। সরকার ওই সিদ্ধান্তের পক্ষে প্রশ্ন ফাঁস, কোচিংবাণিজ্য, শিক্ষার্থীদের হয়রানির অজুহাত দেখিয়ে জনপ্রিয় ও গ্রহণযোগ্য পদ্ধতি গতকাল বাতিল করে সরকার। এরপর ওই দিনই মন্ত্রণালয়ের এ-সংক্রান্ত এক বৈঠক শেষে স্বাস্থ্যমন্ত্রী আ ফ ম রুহুল হক ওই সিদ্ধান্তের কথা জানান। ওই দিনই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। গতকাল থেকে তারা কঠোর আন্দোলন শুরু করেছেন।
রাস্তা অবরোধ, রাস্তায় ইফতার : পরীক্ষা পদ্ধতি পুনর্বহাল এবং জিপিএর ভিত্তিতে ভর্তির সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে দুপুর সাড়ে ৩টার দিকে পাঁচ শতাধিক ভর্তিচ্ছু জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সড়ক অবরোধ করে। এতে পুরানা পল্টন থেকে শাহবাগ ও হাইকোর্টের দিকের সব সড়কে যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। সন্ধ্যায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তাদের অবরোধ কর্মসূচি চলছিল। আন্দোলনরত শিক্ষার্থী জাইন জায়েদ বলেন, বিকালে সচিবালয়ে স্মারকলিপি দিতে গেলে পুলিশ বাধা দেয়ায় সড়ক অবরোধ করা হয়। আন্দালনকারীদের একজন সিজান সন্ধ্যায় আমার দেশকে বলেন, বিকাল থেকে প্রেস ক্লাবের সামনের সড়ক আমরা অবরোধ করে আছি। সন্ধ্যা পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে কোনো আশ্বাস পাওয়া যায়নি। তিনি আরও জানান, এখানে সন্ধ্যায় ইফতারও করেছি। সন্ধ্যার পর অবরোধ চলবে এবং আগামীকালও তা অব্যাহত থাকবে। তবে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত রাত ৮টার পর অবরোধ তুলে নেয় শিক্ষার্থীরা। আজ ৯টা থেকে আবার শহীদ মিনারে অবস্থান করেন তারা। এদিকে রাজধানী ঢাকা ছাড়াও চট্টগ্রাম ও বরিশালে সরকারের ওই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও সমাবেশ হয়েছে।
মানববন্ধন ও অবস্থান ধর্মঘট : সকাল ১০টার দিকে শহীদ মিনারের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করে আন্দোলনকারী এই শিক্ষার্থী ও অভিবাবকরা। সেখান থেকে তারা জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে গিয়ে মানববন্ধন করে। তা চলে ১১টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত। এরপর আন্দোলনকারীরা আবার শহীদ মিনারে ফিরে আসে। সেখানে দুপুর পৌনে ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত তারা অবস্থান ধর্মঘট ও প্রতিবাদ সমাবেশ করে।
এরপর আন্দোলনকারীরা স্বাস্থ্য অধিদফতরে স্মারকলিপি দিতে যাওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে শাহবাগে পৌঁছালে পুলিশ তাদের বাধা দেয়।। পরে তারা সচিবালয়ের দিকে রওনা হয়।
স্মারকলিপি : ভর্তিচ্ছুরা স্বাস্থ্যমন্ত্রী আ ফ ম রুহুল হককে স্মারকলিপি দিতে সচিবালয়ের দিকে যায়। সেখানে গিয়ে তারা সচিবালয়ের পশ্চিম পাশের রাস্তায় অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে। স্মারকলিপি দিতে ভর্তিচ্ছুরা মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে চাইলে মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা প্রথমে তাদের অনুমতি দেয়নি। পুলিশও তাদের বাধা দেয়। সেখানে বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে অনুমতি পেয়ে ভর্তিচ্ছুদের একটি প্রতিনিধি দল গিয়ে মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছে স্মারকলিপি পৌঁছে দেন। তবে এ সময় মন্ত্রী তার কার্যালয়ে ছিলেন না বলে প্রতিনিধি দলটি জানায়।
ফেসবুক ও ব্লগে প্রতিবাদের ঝড় : ফেসবুকে খোলা একটি পেজে ভর্তিচ্ছু শতাধিক মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতের আশ্রয় নেয়ার মত দেন। বিভিন্ন ব্লগে প্রচুর লেখালেখি শুরু হয়েছে। জিপিএর ভিত্তিতে ভর্তি প্রক্রিয়াটি একটি অস্বচ্ছ প্রক্রিয়া এবং এর মাধ্যমে দুর্নীতির মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি করানোর পথ তৈরি হবে বলে মত দেন তারা।
ভর্তিচ্ছু ও তাদের অভিভাবকদের মতামত ও অভিযোগ : আন্দোলনে অংশ নেয়া জাইন নামের এক ভর্তিচ্ছু বলেন, গত বছর বুয়েটে ভর্তির সুযোগ পেয়েও ভর্তি হইনি। মেডিকেলে পড়ার জন্য এক বছর ধরে পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়েছি। কিন্তু এখন ভর্তি পরীক্ষা না নিলে কোথাও ভর্তি হতে পারব না। শিক্ষার্থী আশফিয়া ও তুষার বলেন, পরীক্ষা না নেয়ার সিদ্ধান্ত ও জিপিএ পদ্ধতি চালু প্রহসনমূলক। এ সিদ্ধান্ত নিলে তা অন্তত এক বছর আগেই নেয়া উচিত ছিল। আন্দোলনে অংশ নেয়া বুশরা ও তার বাবা মাযহারুল ইসলাম বলেন, পরীক্ষার মাধ্যমে ভর্তিই মেধাবী যাচাইয়ের সর্বত্তম পন্থা। গত বছর মেডিকেলে ভর্তি হতে না পেরে এবার ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়েছেন জানিয়ে বুশরা বলেন, এখন আমাকে ভর্তির জন্য পরীক্ষায় অংশ নিতে না দিলে আমি কোথায় যাব? বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি না নিয়ে মেডিকেলের জন্য লেখাপড়া করেছি। এখন আমার শিক্ষাজীবন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। বুশরা আরও জানায়, এসএসসি ও এইচএসসিতে ভালো ফলের জন্য পাঠ্যবইয়ের নির্দিষ্ট কিছু অংশ ভালোভাবে পড়লেই হয়। কিন্তু মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় ভালো করার জন্য পুরো বই পড়তে হয়। তাই মেধা যাচাইয়ে এটাই ভালো পন্থা। তাই আমাদের মেধা যাচাইয়ের সুযোগ দেয়ার জন্য ভর্তি পরীক্ষা নেয়া হাক। আরেক শিক্ষার্থী ফেরদৌসী আরা বলেন, অন্তত হাজার হাজার শিক্ষার্থীর এসএসসি ও এইচএসসিতে জিপিএ-৫ রয়েছে। তাদের মধ্য থেকেই ভর্তির জন্য বাছাই করা হবে। যাদের জিপিএ একটু কম, তারা তাহলে কী করবে? ভর্তি পরীক্ষার সময় কাছাকাছি চলে এসেছে। তাই এখন তো আর বুয়েট বা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য আলাদা করে প্রস্তুতি নেয়া যাবে না। রিট আবেদনকারী ইউনুস আলী আকন্দ জানান, দেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দলই নিজেদের স্বার্থ নিয়ে ব্যস্ত। বুয়েট অচল করে দিয়েছে। এখন মেডিকেল ধ্বংস করে দিতে চায়। ভর্তি পরীক্ষা ছাড়া মেডিকেলে ভর্তি করলে এই শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে যাবে। মেধাবীরা বঞ্চিত হবে। পরীক্ষা না হলে ভর্তি থেকেই দুর্নীতি বাড়বে।
প্রসঙ্গত, ৫৩টি সরকারি-বেসরকারি এমবিবিএস মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজে প্রচলিত ব্যবস্থা ছিল পরীক্ষার মাধ্যমে ভর্তি। ভর্তির জন্য ফলাফল স্কোর এবং ভর্তি পরীক্ষার ওপর মোট ২০০ নম্বর ছিল। এর মধ্যে ১০০ নম্বর ছিল ভর্তি পরীক্ষায় আর বাকি ১০০ নম্বর এসএসসি ও এইএসসি ফলাফলের ওপর। দুটির সমন্বয়ে মেধা তালিকা করে ভর্তি করা হতো। কিন্তু সরকার এই গ্রহণযোগ্য জনপ্রিয় পদ্ধতিকে নানা অজুহাত দেখিয়ে জিপিএ পদ্ধতি চালু করল।
চট্টগ্রামে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন : সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার দাবিতে চট্টগ্রামে মানববন্ধন করেছে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা। রোববার বিকালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে মেডিকেলে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা এ কর্মসূচি পালন করে।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেছে, মেডিকেল কলেজে হঠাত্ করে ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার পদ্ধতি বাতিল করে জিপিএ’র ভিত্তিতে ভর্তির সিদ্ধান্ত অমানবিক। তারা বলেছে একটি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে কমপক্ষে এক বছর আগে থেকে ঘোষণা দিতে হবে। তারা প্রশ্ন রেখে বলেছে নতুন সিদ্ধান্তের ফলে আমরা মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ না পেলে এর দায় কে নেবে। শিক্ষার্থীরা অবিলম্বে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ঘোষণা বাতিল করে অন্যান্যবারের মতো ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে মেডিকেল কলেজগুলোতে ভর্তির দাবি জানায়।
মানববন্ধনে চট্টগ্রাম কলেজ, হাজী মুহাম্মদ মহসীন কলেজ, সরকারি সিটি কলেজ, বিএফ শাহীন কলেজ, নৌবাহিনী কলেজসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা অংশ নেয়।
যশোরে মানববন্ধন, অবরোধ : মেডিকেল কলেজ এবং ডেন্টাল কলেজে ভর্তিতে লিখিত পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে যশোরে মানববন্ধন ও সড়ক অবরোধ করেছে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা। গতকাল দুপুর ১২টার দিকে শহরের মুজিব সড়কে প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করে তারা। মানববন্ধন শেষে শিক্ষার্থীরা প্রায় এক ঘণ্টা সড়কটি অবরোধ করে রাখে। এ সময় ব্যস্ত সড়কটিতে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে। কর্মসূচিতে যশোর সরকারি এমএম কলেজ, সিটি কলেজ, ক্যান্টনমেন্ট কলেজসহ বিভিন্ন কলেজ থেকে এ বছর এইচএসসি উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা অংশ নেয়।
মানববন্ধনে অংশ নেয়া শিক্ষার্থীরা বলেছে, তারা সরকারের এ সিদ্ধান্ত মানতে নারাজ। এর ফলে শিক্ষার্থীরা মেধা বিকাশের সুযোগ হারিয়ে ফেলবে। তারা এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে পরীক্ষা পদ্ধতি বহাল রাখার দাবি জানায়।
রংপুরে সড়ক অবরোধ, স্মারকলিপি : জিপিএ’র ভিত্তিতে মেডিকেলে ভর্তির সরকারের সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি এবং আগের নিয়ম অনুযায়ী ভর্তি প্রক্রিয়া বহাল রাখার দাবিতে গতকাল রংপুরের বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থীরা প্রেস ক্লাবের সামনে সড়ক অবরোধ করে। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী সড়ক অবরোধে নগরীতে যানজটে জনজীবন নাভিশ্বাস হয়ে ওঠে। এর আগে তারা দাবি বাস্তবায়নের জন্য রংপুর বিভাগীয় কমিশনারের মাধ্যমে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বরাবর একটি স্মারকলিপি দেয়।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, মডিকেলে ভর্তির প্রস্তুতির শেষ মুহূর্তে সরকারের এই আত্মঘাতী সিদ্ধান্তের ফলে মেডিকেলে চান্স না হলে সময় স্বল্পতার কারণে অন্য কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাওয়ার সুযোগ খুবই সীমিত। এদিকে যেমন ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষে ভর্তিচ্ছু পরীক্ষার্থীরা এরই মধ্যে দুই মাস কষ্ট করে প্রস্তুতি নিচ্ছে, অন্যদিকে দ্বিতীয়বারের মতো মেডিকেলে ভর্তিচ্ছু পরীক্ষার্থীরা প্রায় এক বছর ধরে ভর্তির প্রস্তুতি নিচ্ছে। এতদিন প্রস্তুতি নেয়ার পর সরকারের এই সিদ্ধান্তে আমরা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছি।
সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে কঠোর আন্দোলনে মেডিকেল কলেজে ভর্তিচ্ছু হাজারও শিক্ষার্থী। ভর্তিতে জিপিএ পদ্ধতির সিদ্ধান্ত বাতিল করে প্রচলিত পরীক্ষা পদ্ধতি পুনর্বহালের দাবিতে গতকাল তারা রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে দিনভর বিক্ষোভ, অবস্থান ধর্মঘট, রাস্তা অবরোধ ও স্মারকলিপি দিয়েছেন। এসব কর্মসূচিতে বাঁধা দিয়েছে পুলিশ। অন্যদিকে সামাজিক ওয়েবসাইট ফেসবুক ও ব্লগেও প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। তবে এ বিষয়ে শেষ পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে দাবি পূরণের আশ্বাস পাওয়া যায়নি।
এদিকে সরকারের সিদ্ধান্তের চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করা হয়েছে। পরীক্ষা পদ্ধতি বাতিল করে জিপিএর ভিত্তিতে মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজে শিক্ষার্থী ভর্তির সিদ্ধান্তের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে গতকাল ‘জনস্বার্থে’ হাইকোর্টে রিট আবেদন করেছেন ড. ইউনুস আলী আকন্দ নামের এক আইনজীবী।
রিটকারী এই আইনজীবী জানান, মঙ্গলবার (আজ) বিচারপতি নাঈমা হায়দার ও মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের বেঞ্চে এ আবেদনের ওপর শুনানি হতে পারে। রিট আবেদনে দুটি রুল এবং দুটি অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। ওই আইনজীবী জানান, এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএস প্রথম বর্ষে ভর্তির সিদ্ধান্ত কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এবং ওই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার ও বাতিলে বিবাদীদের কেন নির্দেশ দেয়া হবে না, তা জানতে রুল চাওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে ওই সিদ্ধান্তের কার্যকারিতা স্থগিত করার অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ এবং ২০১২-১৩ সেশনে এমবিবিএস প্রথম বর্ষে ভর্তির বিজ্ঞাপন প্রকাশের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে রিট আবেদনে। রিট আবেদনে স্বাস্থ্যসচিব, শিক্ষাসচিব, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালককে বিবাদী করা হয়েছে।
রোববার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য প্রচলিত পরীক্ষা পদ্ধতি বাতিল করে। এর পরিবর্তে ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষ থেকে নতুন করে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার জিপিএ ফলাফলের ভিত্তিতে শিক্ষার্থী ভর্তি নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। সরকার ওই সিদ্ধান্তের পক্ষে প্রশ্ন ফাঁস, কোচিংবাণিজ্য, শিক্ষার্থীদের হয়রানির অজুহাত দেখিয়ে জনপ্রিয় ও গ্রহণযোগ্য পদ্ধতি গতকাল বাতিল করে সরকার। এরপর ওই দিনই মন্ত্রণালয়ের এ-সংক্রান্ত এক বৈঠক শেষে স্বাস্থ্যমন্ত্রী আ ফ ম রুহুল হক ওই সিদ্ধান্তের কথা জানান। ওই দিনই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। গতকাল থেকে তারা কঠোর আন্দোলন শুরু করেছেন।
রাস্তা অবরোধ, রাস্তায় ইফতার : পরীক্ষা পদ্ধতি পুনর্বহাল এবং জিপিএর ভিত্তিতে ভর্তির সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে দুপুর সাড়ে ৩টার দিকে পাঁচ শতাধিক ভর্তিচ্ছু জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সড়ক অবরোধ করে। এতে পুরানা পল্টন থেকে শাহবাগ ও হাইকোর্টের দিকের সব সড়কে যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। সন্ধ্যায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তাদের অবরোধ কর্মসূচি চলছিল। আন্দোলনরত শিক্ষার্থী জাইন জায়েদ বলেন, বিকালে সচিবালয়ে স্মারকলিপি দিতে গেলে পুলিশ বাধা দেয়ায় সড়ক অবরোধ করা হয়। আন্দালনকারীদের একজন সিজান সন্ধ্যায় আমার দেশকে বলেন, বিকাল থেকে প্রেস ক্লাবের সামনের সড়ক আমরা অবরোধ করে আছি। সন্ধ্যা পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে কোনো আশ্বাস পাওয়া যায়নি। তিনি আরও জানান, এখানে সন্ধ্যায় ইফতারও করেছি। সন্ধ্যার পর অবরোধ চলবে এবং আগামীকালও তা অব্যাহত থাকবে। তবে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত রাত ৮টার পর অবরোধ তুলে নেয় শিক্ষার্থীরা। আজ ৯টা থেকে আবার শহীদ মিনারে অবস্থান করেন তারা। এদিকে রাজধানী ঢাকা ছাড়াও চট্টগ্রাম ও বরিশালে সরকারের ওই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও সমাবেশ হয়েছে।
মানববন্ধন ও অবস্থান ধর্মঘট : সকাল ১০টার দিকে শহীদ মিনারের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করে আন্দোলনকারী এই শিক্ষার্থী ও অভিবাবকরা। সেখান থেকে তারা জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে গিয়ে মানববন্ধন করে। তা চলে ১১টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত। এরপর আন্দোলনকারীরা আবার শহীদ মিনারে ফিরে আসে। সেখানে দুপুর পৌনে ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত তারা অবস্থান ধর্মঘট ও প্রতিবাদ সমাবেশ করে।
এরপর আন্দোলনকারীরা স্বাস্থ্য অধিদফতরে স্মারকলিপি দিতে যাওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে শাহবাগে পৌঁছালে পুলিশ তাদের বাধা দেয়।। পরে তারা সচিবালয়ের দিকে রওনা হয়।
স্মারকলিপি : ভর্তিচ্ছুরা স্বাস্থ্যমন্ত্রী আ ফ ম রুহুল হককে স্মারকলিপি দিতে সচিবালয়ের দিকে যায়। সেখানে গিয়ে তারা সচিবালয়ের পশ্চিম পাশের রাস্তায় অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে। স্মারকলিপি দিতে ভর্তিচ্ছুরা মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে চাইলে মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা প্রথমে তাদের অনুমতি দেয়নি। পুলিশও তাদের বাধা দেয়। সেখানে বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে অনুমতি পেয়ে ভর্তিচ্ছুদের একটি প্রতিনিধি দল গিয়ে মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছে স্মারকলিপি পৌঁছে দেন। তবে এ সময় মন্ত্রী তার কার্যালয়ে ছিলেন না বলে প্রতিনিধি দলটি জানায়।
ফেসবুক ও ব্লগে প্রতিবাদের ঝড় : ফেসবুকে খোলা একটি পেজে ভর্তিচ্ছু শতাধিক মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতের আশ্রয় নেয়ার মত দেন। বিভিন্ন ব্লগে প্রচুর লেখালেখি শুরু হয়েছে। জিপিএর ভিত্তিতে ভর্তি প্রক্রিয়াটি একটি অস্বচ্ছ প্রক্রিয়া এবং এর মাধ্যমে দুর্নীতির মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি করানোর পথ তৈরি হবে বলে মত দেন তারা।
ভর্তিচ্ছু ও তাদের অভিভাবকদের মতামত ও অভিযোগ : আন্দোলনে অংশ নেয়া জাইন নামের এক ভর্তিচ্ছু বলেন, গত বছর বুয়েটে ভর্তির সুযোগ পেয়েও ভর্তি হইনি। মেডিকেলে পড়ার জন্য এক বছর ধরে পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়েছি। কিন্তু এখন ভর্তি পরীক্ষা না নিলে কোথাও ভর্তি হতে পারব না। শিক্ষার্থী আশফিয়া ও তুষার বলেন, পরীক্ষা না নেয়ার সিদ্ধান্ত ও জিপিএ পদ্ধতি চালু প্রহসনমূলক। এ সিদ্ধান্ত নিলে তা অন্তত এক বছর আগেই নেয়া উচিত ছিল। আন্দোলনে অংশ নেয়া বুশরা ও তার বাবা মাযহারুল ইসলাম বলেন, পরীক্ষার মাধ্যমে ভর্তিই মেধাবী যাচাইয়ের সর্বত্তম পন্থা। গত বছর মেডিকেলে ভর্তি হতে না পেরে এবার ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়েছেন জানিয়ে বুশরা বলেন, এখন আমাকে ভর্তির জন্য পরীক্ষায় অংশ নিতে না দিলে আমি কোথায় যাব? বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি না নিয়ে মেডিকেলের জন্য লেখাপড়া করেছি। এখন আমার শিক্ষাজীবন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। বুশরা আরও জানায়, এসএসসি ও এইচএসসিতে ভালো ফলের জন্য পাঠ্যবইয়ের নির্দিষ্ট কিছু অংশ ভালোভাবে পড়লেই হয়। কিন্তু মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় ভালো করার জন্য পুরো বই পড়তে হয়। তাই মেধা যাচাইয়ে এটাই ভালো পন্থা। তাই আমাদের মেধা যাচাইয়ের সুযোগ দেয়ার জন্য ভর্তি পরীক্ষা নেয়া হাক। আরেক শিক্ষার্থী ফেরদৌসী আরা বলেন, অন্তত হাজার হাজার শিক্ষার্থীর এসএসসি ও এইচএসসিতে জিপিএ-৫ রয়েছে। তাদের মধ্য থেকেই ভর্তির জন্য বাছাই করা হবে। যাদের জিপিএ একটু কম, তারা তাহলে কী করবে? ভর্তি পরীক্ষার সময় কাছাকাছি চলে এসেছে। তাই এখন তো আর বুয়েট বা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য আলাদা করে প্রস্তুতি নেয়া যাবে না। রিট আবেদনকারী ইউনুস আলী আকন্দ জানান, দেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দলই নিজেদের স্বার্থ নিয়ে ব্যস্ত। বুয়েট অচল করে দিয়েছে। এখন মেডিকেল ধ্বংস করে দিতে চায়। ভর্তি পরীক্ষা ছাড়া মেডিকেলে ভর্তি করলে এই শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে যাবে। মেধাবীরা বঞ্চিত হবে। পরীক্ষা না হলে ভর্তি থেকেই দুর্নীতি বাড়বে।
প্রসঙ্গত, ৫৩টি সরকারি-বেসরকারি এমবিবিএস মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজে প্রচলিত ব্যবস্থা ছিল পরীক্ষার মাধ্যমে ভর্তি। ভর্তির জন্য ফলাফল স্কোর এবং ভর্তি পরীক্ষার ওপর মোট ২০০ নম্বর ছিল। এর মধ্যে ১০০ নম্বর ছিল ভর্তি পরীক্ষায় আর বাকি ১০০ নম্বর এসএসসি ও এইএসসি ফলাফলের ওপর। দুটির সমন্বয়ে মেধা তালিকা করে ভর্তি করা হতো। কিন্তু সরকার এই গ্রহণযোগ্য জনপ্রিয় পদ্ধতিকে নানা অজুহাত দেখিয়ে জিপিএ পদ্ধতি চালু করল।
চট্টগ্রামে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন : সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার দাবিতে চট্টগ্রামে মানববন্ধন করেছে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা। রোববার বিকালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে মেডিকেলে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা এ কর্মসূচি পালন করে।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেছে, মেডিকেল কলেজে হঠাত্ করে ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার পদ্ধতি বাতিল করে জিপিএ’র ভিত্তিতে ভর্তির সিদ্ধান্ত অমানবিক। তারা বলেছে একটি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে কমপক্ষে এক বছর আগে থেকে ঘোষণা দিতে হবে। তারা প্রশ্ন রেখে বলেছে নতুন সিদ্ধান্তের ফলে আমরা মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ না পেলে এর দায় কে নেবে। শিক্ষার্থীরা অবিলম্বে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ঘোষণা বাতিল করে অন্যান্যবারের মতো ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে মেডিকেল কলেজগুলোতে ভর্তির দাবি জানায়।
মানববন্ধনে চট্টগ্রাম কলেজ, হাজী মুহাম্মদ মহসীন কলেজ, সরকারি সিটি কলেজ, বিএফ শাহীন কলেজ, নৌবাহিনী কলেজসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা অংশ নেয়।
যশোরে মানববন্ধন, অবরোধ : মেডিকেল কলেজ এবং ডেন্টাল কলেজে ভর্তিতে লিখিত পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে যশোরে মানববন্ধন ও সড়ক অবরোধ করেছে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা। গতকাল দুপুর ১২টার দিকে শহরের মুজিব সড়কে প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করে তারা। মানববন্ধন শেষে শিক্ষার্থীরা প্রায় এক ঘণ্টা সড়কটি অবরোধ করে রাখে। এ সময় ব্যস্ত সড়কটিতে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে। কর্মসূচিতে যশোর সরকারি এমএম কলেজ, সিটি কলেজ, ক্যান্টনমেন্ট কলেজসহ বিভিন্ন কলেজ থেকে এ বছর এইচএসসি উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা অংশ নেয়।
মানববন্ধনে অংশ নেয়া শিক্ষার্থীরা বলেছে, তারা সরকারের এ সিদ্ধান্ত মানতে নারাজ। এর ফলে শিক্ষার্থীরা মেধা বিকাশের সুযোগ হারিয়ে ফেলবে। তারা এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে পরীক্ষা পদ্ধতি বহাল রাখার দাবি জানায়।
রংপুরে সড়ক অবরোধ, স্মারকলিপি : জিপিএ’র ভিত্তিতে মেডিকেলে ভর্তির সরকারের সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি এবং আগের নিয়ম অনুযায়ী ভর্তি প্রক্রিয়া বহাল রাখার দাবিতে গতকাল রংপুরের বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থীরা প্রেস ক্লাবের সামনে সড়ক অবরোধ করে। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী সড়ক অবরোধে নগরীতে যানজটে জনজীবন নাভিশ্বাস হয়ে ওঠে। এর আগে তারা দাবি বাস্তবায়নের জন্য রংপুর বিভাগীয় কমিশনারের মাধ্যমে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বরাবর একটি স্মারকলিপি দেয়।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, মডিকেলে ভর্তির প্রস্তুতির শেষ মুহূর্তে সরকারের এই আত্মঘাতী সিদ্ধান্তের ফলে মেডিকেলে চান্স না হলে সময় স্বল্পতার কারণে অন্য কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাওয়ার সুযোগ খুবই সীমিত। এদিকে যেমন ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষে ভর্তিচ্ছু পরীক্ষার্থীরা এরই মধ্যে দুই মাস কষ্ট করে প্রস্তুতি নিচ্ছে, অন্যদিকে দ্বিতীয়বারের মতো মেডিকেলে ভর্তিচ্ছু পরীক্ষার্থীরা প্রায় এক বছর ধরে ভর্তির প্রস্তুতি নিচ্ছে। এতদিন প্রস্তুতি নেয়ার পর সরকারের এই সিদ্ধান্তে আমরা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছি।
No comments:
Post a Comment